পরিবেশ অধিদপ্তরের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
পরিবেশ সংরক্ষণ আন্তর্জাতিকভাবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলির মধ্যে অন্যতম। ক্রমাগত পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। পরিবেশবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশগত এই বিষয়টির প্রতি বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। ১৯৭২ সালে স্টকহোমে অনুষ্ঠিত স্টকহোম কনফারেন্স অন হিউম্যান এনভায়রনমেন্ট এর মধ্য দিয়ে পরিবেশ সংরক্ষণে আন্তজাতিক সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের সূচনা হয়। ১৯৭২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে অনুষ্ঠিত আর্থ সামিটের মাধ্যমে এই প্রচেষ্টার একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হয়। বৈশ্বিক পরিবেশগত সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ স্থানীয় ও আঞ্চলিক সমস্যার শিকার। বাংলাদেশ প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এবং মানুষের দ্বারা সৃষ্ট উভয় পরিবেশগত সমস্যার মুখোমুখি। অতিরিক্ত জনসংখ্যা এবং দারিদ্র্যতা বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।বাংলাদেশ যে সকল পরিবেশগত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তা হল: বন উজাড়, পানি দূষণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জমির অবক্ষয়, লবণাক্ততা, অপরিকল্পিত নগরায়ন, অপরিকল্পিত পয়ঃনিষ্কাশন ও শিল্পবর্জ্য নিষ্কাশন ইত্যাদি।
১৯৭২ সালে স্টকহোম কনফারেন্স অন হিউম্যান এনভায়রনমেন্ট এর পরপরই বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথম পরিবেশ সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। স্টকহোম সম্মেলনের ফলোআপ পদক্ষেপ হিসেবে, বাংলাদেশ সরকার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ২৭ জন জনবল দিয়ে পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করে এবং পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৭৩ জারি করে । পরবর্তী বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রমের মাধ্যমে ইহা বর্তমান পর্যায়ে উপনীত হয় ।
১৯৭৭ সালে, পরিকল্পনা কমিশনের একজন সদস্যের নেতৃত্বে ১৬ জন সদস্য নিয়ে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড এবং ২৬ জন জনবলসহ একজন পরিচালকের নেতৃত্বে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ সেল প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ১৯৮৯ সালে দূষণ নিয়ন্ত্রণ সেল ও পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প সমন্বিত করে মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তর নামে পূর্নগঠন করা হয় । পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রম সারা দেশে বিস্তৃত থাকলেও ইহার অফিস কেবল মাত্র বিভাগীয় সদরে অবস্থিত ছিল। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ২১টি জেলায় এবং ২০১৯ সালে সকল জেলায় কার্যালয় স্থাপনের নিমিত্তে সাংগঠনিক কাঠামোর অনুমোদন পায় এবং কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদিত জনবলের সংখ্যা ১১৩৩।
এক নজরে ঝালকাঠি জেলা কার্যালয়, ঝালকাঠি
পরিবেশ অধিদপ্তর, ঝালকাঠি জেলা কার্যালয়টি সুরমা ভবন, কলেজ মোড়, সদর, ঝালকাঠিতে অবস্থিত। কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে একজন সহকারী পরিচালক রয়েছেন। বরিশাল জেলা কার্যালয়টি ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ঝালকাঠিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর, ঝালকাঠি জেলা কার্যালয় ঝালকাঠি জেলার অন্তর্গত ০৪টি উপজেলায় বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জন্য দূষণমুক্ত পরিবেশ রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ জেলার সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান/প্রকল্প স্থাপনের জন্য অনলাইনে পরিবেশগত ছাড়পত্র ও নবায়ন প্রদান, কার্যক্রম মনিটরিং এবং এনফোর্সমেন্ট ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়ে থাকে। বিদ্যমান শিল্প প্রতিষ্ঠান/প্রকল্পের ক্ষেত্রেও একইরূপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। পরিবেশ দূষণের যেকোনো ধরণের অভিযোগ, জলাশয় ভরাট ইত্যাদি বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শনপূর্বক নোটিশ প্রদান, মোবাইল কোর্ট ও এনফোর্সমেন্ট পরিচালনা করা হয়। পরিবেশ দূষণরোধে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) মোতাবেক সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগ, অবৈধভাবে পরিচালিত ইটভাটা, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, জলাশয় ভরাট বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর, বরিশাল জেলা কার্যালয় মোবাইল কোর্ট ও এনফোর্সমেন্ট পরিচালনা করে থাকে। পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে জনসচেতনতা প্রচার প্রচারনা চালানো হয় এবং প্রতিবছর বিশ্ব পরিবেশ দিবস ৫ জুন অত্যন্ত জাকজমকপূর্ণভাবে পালন করা হয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস